বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ১১১টি মামলা হয়েছে। নানা ধরনের অবাস্তব অভিযোগ আনা হয়েছে। ময়লার গাড়ি পোড়ানো, বোমা হামলার মতো অভিযোগও আছে। আমি ১১ বার জেলে গিয়েছি। প্রায় তিন বছর কারাবন্দী ছিলাম।’
মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁও সদরের মোলানি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে বিএনপির গণসংযোগ কর্মসূচিতে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। তিনি জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ছয় বছর বন্দী ছিলেন। এর মধ্যে দুই বছর ছিলেন একেবারে অন্ধকার কক্ষে।
বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সরকার ১৫ বছর রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়েছে, মিথ্যা মামলা দিয়েছে ও অনেক নেতা-কর্মীকে গুম করেছে। আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশের মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চুপ করিয়ে রাখতে চেয়েছে, কিন্তু জনগণ কখনো অন্যায় মেনে নেয়নি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শুধু মামলা আর নির্যাতনের মধ্য দিয়েই ১৫ বছর পার হয়েছে। কিন্তু তাতেও তারা আমাদের দমাতে পারেনি। সারা দেশে মানুষ এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে আজও সোচ্চার। সরকার একটি আয়নাঘর নামের বন্দিশালা তৈরি করেছিল, যেখানে রাজনৈতিক বিরোধীদের দিনের পর দিন, এমনকি বছরের পর বছর বন্দী রাখা হতো। জাতিসংঘের এক পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, এই ধরনের গুমের সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৭০০। আমাদের দলের অনেক নেতা সেই নিখোঁজ ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন।’
সাবেক সেনা কর্মকর্তা আবদুল্লা হিল আমান আজমীর প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তিনি একজন মেধাবী সেনা কর্মকর্তা ছিলেন, যাকে আট বছর আয়নাঘরে আটকে রাখা হয়। আজও অনেকের সন্ধান পাওয়া যায়নি। আমাদের নেতা ইলিয়াস আলীকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁর বাসার সামনে থেকে, সেই থেকে তাঁর আর কোনো খোঁজ মেলেনি।’
আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিএনপি নেতা বলেন, ‘প্রায় ২৬ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। চাকরি ও ব্যবসা পেতে হলেও দলীয় পরিচয় দেখা হয়েছে। বিএনপি সমর্থকদের ক্ষেত্রে চরম বৈষম্য করা হয়েছে।’
আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘২০১৪ সালের পর দেশে আর কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। আজ যারা ১৮-২০ বছর বয়সী, তারা জীবনে একবারও ভোট দিতে পারেনি। এবার একটি সুযোগ এসেছে, আমরা যেন সবাই মিলে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারি।’
সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা দেশকে একটি সুন্দর, শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আমাদের প্রস্তাবিত সংস্কারের লক্ষ্যও তাই—কোনো বিভেদ নয়, ঐক্যের বাংলাদেশ গড়া।’
গণসংযোগ কর্মসূচিতে জেলা বিএনপির সহসভাপতি সুলতানুল ফেরদৌস নম্র চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, যুগ্ম সম্পাদক পয়গাম আলীসহ দলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক/ গ্রামীণ বার্তা
সম্পর্কিত সংবাদ
টাঙ্গাইল
আওয়ামী নেতাকে পিটিয়ে হত্যা
মিজানুরের চাচা মহির উদ্দিন ও স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার ভাইঘাট বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদে মাগরিবের নামাজ আদায় করে মিজানুর...
রাজনীতি
মানবাধিকার সংকটে ইউনুস সরকারের ভূমিকা
গত আগস্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতা থেকে উৎখাত হওয়ার পর বাংলাদেশের শাসনভার গ্রহণ করেন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী...
বিশ্ব
ভারতে ছড়ানো হচ্ছে মুসলিমবিদ্বেষী গান
উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন গ্রুপ থেকে গানগুলো অনলাইনে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারা গানগুলো বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম...
টাঙ্গাইল
জনবলসংকটে টাঙ্গাইল মেডিকেল
আন্তবিভাগে অপারেশন, সিজারিয়ান অপারেশন ও স্বাভাবিক প্রসবসেবা চালু রয়েছে। এ ছাড়া রক্তসহ সব ধরনের পরীক্ষা, এক্স-রে, সিটিস্ক...
টাঙ্গাইল
ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠার দুই বছরেই অনুপযোগী হল
হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আরাফাত তরফদার বলেন, “শেখ রাসেল হলের যাত্রার শুরুতেই আমরা হলে উঠি। ডাইনিং চালুর সময় হলে কোনো ওয়াইফ...
টাঙ্গাইল
গণপিটুনি খেয়ে জেলখানায় অভিনেতা সিদ্দিকুর
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে পলাতক থাকা সিদ্দিক হঠাৎ কাকরাইল এলাকায় দেখা দিলে ক্ষুব্ধ জনতা তাকে ঘিরে ফেলে। পরে...
